আবারো আন্দোলনে চিকিৎসকেরা, সর্বশেষ যা জানা গেল।




ভারতের পশ্চিমবঙ্গে এক শিক্ষানবিশ চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবারও কলকাতায় ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। এই আন্দোলনে চিকিৎসকদের অংশগ্রহণের ফলে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা ভেঙে পড়ার পথে।


9 আগস্ট, 2018-এ, কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে একজন শিক্ষানবিশ চিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যা ভারতের বিভিন্ন অংশ সহ রাজ্যের বিভিন্ন অংশে ব্যাপক বিক্ষোভের জন্ম দেয়।


রাজ্য সরকারের দেওয়া তথ্য অনুসারে, গত এক মাসে পশ্চিমবঙ্গে আন্দোলনের কারণে যথাযথ চিকিৎসা সেবা না পেয়ে 23 জন মারা গেছে। এই পরিস্থিতিতে অস্বস্তি বাড়ছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের।


তবে চিকিৎসকরা বলছেন, পশ্চিমবঙ্গে কোমায় বেশি রোগী মারা যায়। এসব মৃত্যু তারই অংশ। উত্তেজিত রোগীদের চিকিৎসায় অবহেলা হয় না। তরুণ ও শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা আন্দোলন করছেন, সিনিয়র ডাক্তাররা নয়। আন্দোলন ঠেকাতে সরকার বিষয়টি তুলছে।


সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, দাবি মেনে নিতে রাজ্য সরকারকে সাতদিন সময় দেওয়া হবে। দাবি মানা না হলে সরকারি হাসপাতাল থেকে গণপদত্যাগ করবেন চিকিৎসকরা। যদিও পদত্যাগের বিষয়টি এখনো সেভাবে বলা হয়নি। কিন্তু পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে, মমতা সরকার চিকিৎসকদের দাবি না মানলে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা শীঘ্রই ভেঙে পড়বে।


সোমবার সুপ্রিম কোর্টে তৃতীয় দফায় চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের মামলার শুনানি হয়। রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিবাল শুনানিতে রোগীর মৃত্যুর বিষয়টি তুলে ধরেন। এরপর আদালত পশ্চিমবঙ্গের জুনিয়র চিকিৎসকদের মঙ্গলবার বিকেল ৫টার মধ্যে কাজ করতে রিপোর্ট করার নির্দেশ দেন। আদালত নিশ্চিত করেছে যে রাজ্য প্রশাসন অ-সম্মতির ক্ষেত্রে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে পারে।


আদালতের এই আদেশের পরই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন চিকিৎসকরা। তারা বলছেন, হত্যার বিচার পেতে সময় লাগতে পারে। কিন্তু আদালত কেন তাদের নিরাপত্তা দাবি করে রায় দেননি। আদালত তাদের কোনো বক্তব্য শোনেনি। চিকিৎসকদের সঙ্গে নানাভাবে মিথ্যাচার করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন আন্দোলনকারীদের কেউ কেউ।


জুনিয়র চিকিৎসকরা পশ্চিমবঙ্গের সব সরকারি হাসপাতালে ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা স্থাপন, হাসপাতালের সব এলাকায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, চিকিৎসক ও চিকিৎসকদের জন্য আলাদা বাথরুম ও টয়লেটের ব্যবস্থা করা এবং নিরাপত্তার নিশ্চয়তা সহ বেশ কিছু দাবি তুলেছেন। রাতের শিফট যতদিন পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা মুখ্যমন্ত্রী মমতা এই ব্যবস্থা না নেন, ততদিন আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন তারা।


চিকিৎসকরা বলছেন, শুনানিতে চিকিৎসকদের দাবির ওপর বিচারকরা রায় দেননি। পরিবর্তে, তিনি মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটায় সবাইকে কাজে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেন। অন্যথায় রাজ্য প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে পারে। এই নির্দেশ ন্যায়বিচারের নামে প্রহসন। তাছাড়া ক্ষমতাসীন দলের লোকজন প্রতিনিয়ত তাদের হুমকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।


পরে মঙ্গলবার বিকেলে কয়েক লাখ চিকিৎসক স্বাস্থ্য ভবনের দিকে মিছিল করেন। তাদের মতে, দাবি মানা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। পরে স্বাস্থ্য ভবনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পাঁচজন বক্তৃতা দিতে প্রবেশ করতে পারবেন।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post