মানুষের জীবনে সুস্থ-অসুস্থ এই নিয়েই জীবন এজন্য আমরা বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য টিপস গুলো জেনে নেই। তাই আপনাদের সাথে আজকে আমি শেয়ার করব থাইরয়েড রোগের ৫ টি সুস্থ থাকার ৫ টি উপায় সম্পর্কে জানিয়ে দেবো।
আশা করি আপনারা যারা এই রোগে আক্রান্ত আছেন তারা অবশ্যই এই টিপস গুলো জানার পরে আপনারা হয়তো মানবেন। মনে করি অবশ্যই আপনি সুস্থ থাকবেন তাই থাইরয়েড এমন একটি রোগ জেটি নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তা করার মতন নয়।
তাই দুশ্চিন্তা বাদ দিয়ে কিভাবে সুস্থ থাকা যায় সেটা খুঁজুন এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুসারে চলুন। তাহলে চলুন শুরু করা যাক আজকের আর্টিকেলটি থাইরয়েডের সুস্থ থাকার জন্য ৫ টি উপায়।
আমরা শুরুতেই জেনে নেই থাইরয়েড সম্পর্কে
থাইরয়েডগ্র্যান্ড হল একটি অন্তক্ষরা গ্রন্থি যেটা থেকে নিঃসৃত হয় থাইরয়েড হরমোন এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি হরমোন। কারণ এটি থেকে শরীরের অন্যান্য প্রয়োজনীয় হরমোন উৎপাদন হয়, এই গ্ল্যান্ড দেখতে অনেকটা প্রজাপতির মতই। যেটি গলার একটি অংশে অবস্থিত থাকে, থাইরয়েডের ক্ষরণ কিন্তু একটা সঠিক পরিমাণে হয়।
মানে শরীরে যতটুকু দরকার ততটুকু কিন্তু শরীরে এই প্রয়োজনের থেকে যখন বেশি বা কম ক্ষরণ হয় তখনই সমস্যা দেখা যায়। এটি একদিনে হয় না ধীরে ধীরে হয় তাই সমস্যা ও ধীরে ধীরে দেখা যায়, এটি যেহেতু শরীরের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ন্ত্রণ করে তাই শরীরের ভেতরে ক্ষতিও ধীরে ধীরে হয়।
যেহেতু এটা খুব ধীরে ধীরে হয় তাই বেশির ভাগই ক্ষেত্রে ভুক্তভোগী বুঝতেই পারেনা তাদের এই সমস্যার কথা শরীরে থাইরয়েড হরমোনের তারতম্য দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। কমে গেলে তাকে বলা হয় হাইপোথাইরয়েডিজম এবং বেড়ে গেলে তাকে বলা হয় হাইপারথাইরয়েডিজম এই দুই ধরনের সমস্যা নিয়েই আজকের আলোচনা করব।
হাইপোথাইরয়েডিজম এর লক্ষণ
যখন শরীরের প্রয়োজনের চেয়ে কম থাইরয়েড হরমোন নিঃসৃত হয় তখন কিছু কিছু উপসর্গ আছে যা দেখে আপনি সন্দেহ করতে পারবেন যে আপনি হয়তো হাইপোথাইরয়েডিজমে ভুগছেন। তবে উপসর্গের আগে এর কারণ সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে, ডিজিট বা থাইরয়েড গ্ল্যান্ড এর প্রধান জন্মগত কিনা।
হাইপোথাইরয়েডিজমে কিংবা কোন কারণে অপারেশন করে থাইরয়েড গ্ল্যান্ড অপসারণ, হাইপোথাইরয়েডিজম দেখা দেয় পুরুষের চেয়ে 50 পার্সেন্ট মহিলারা বেশি সমস্যায় ভোগেন। ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে বলে এর লক্ষন অনেক ক্ষেত্রে নজরে আসে না, কিছু অসাধারণ লক্ষণ হচ্ছে ক্লান্তি, ওজন বৃদ্ধি, মুখ ফুলে যাওয়া, ঠান্ডা সহ সহ্য করতে না পারা, বেশি ব্যথা, কষ্টোকাঠিনো, ত্বকের শুষ্কতা, চুল বেড়ে যাওয়া ও পড়ে যাওয়া, অতিরিক্ত ঘাম, বাড়ি বা অনিয়মিত মাসিক, বিষন্নতা ও হৃৎস্পন্দন ওজন কমে যাওয়া।
এর চিকিৎসা
হাইপোথাইরয়েডিজম এর রোগীদের চিকিৎসা থাইরক্সিন বা থাইরক্সিন সোডিয়াম ওষুধ হিসেবে খেতে বলেন ডাক্তাররা যা আজীবন খেতে হয়। এছাড়াও এইসব রোগীদের বিভিন্ন খাবার যেমন পাঁচটা সিরিয়াল জাতীয় খাবার, পালংশাক, বাঁধাকপি, ফুলকপি, সয়াসস, সিম, কফি, দুধ ও চিনিযুক্ত খাবার ইত্যাদি। এড়িয়ে যেতে বলা হয়ে থাকে চিকিৎসকগণের উপদেশ তাই এসব খাবার গুলো বেঁচে চলবেন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলার চেষ্টা করবেন।
হাইপোথাইরয়েডিজম
হাইপার থাইরয়েডিজম এমন একটি রোগ যেখানে আপনার থাইরয়েড গৃহিণী টি হতে থাইরয়েড ক্রিম হরমোন অনেক বেশি উপদান করে। সাধারণত ডিজিজ অতিরিক্ত থাইরয়েড হরমোন অতিরিক্ত আয়োডিন সেবন থাইরয়েড ইত্যাদি কারণে থাইরয়েড হরমোন বেশি উপকার হয়।
যাদের হাইপার থাইরয়েড সমস্যা হয় তাদের জন্য কমে যায় বিরক্ত বোধ থাকে ডায়রিয়ার প্রবণতা থাকে রাত থাকে মেজাজ খারাপ থাকে। তারা অনেক খায় তবে ওজন বাড়ে না গরম সহ্য করতে না পারা ঘাম হয়ে অতিরিক্ত বুক ধড়ফড় করা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যায়।
এর চিকিৎসা
হাইপোথাইরয়েডিজম এর চিকিৎসা হচ্ছে এন্টি থাইরয়েড থাইরয়েড গৃহিণীর কার্যকারিতা কমিয়ে দিবে ওষুধের পাশাপাশি সার্জারি করা যেতে পারে। যেহেতু গৃহিণী বেশি কাজ করেছে তাই কিছু অংশ কেটে কার্যকারিতা কমিয়ে দেওয়া যেতে পারে।
গর্ভাবস্থায় থাইরয়েড
গর্ভধারণের প্রথম ১২ সপ্তাহে ভ্রুণের বৃদ্ধি নির্ভর করে মায়ের থাইরয়েড হরমোনের উপর। তাই মায়ের পর্যাপ্ত পরিমাণে থাইরয়েড হরমোন নিঃসরণ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এ হরমোন গর্ভের শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হাইপোথাইরয়েডিজমের কারণে বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে।
এ সমস্যার ফলে গর্ভের বাচ্চার শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি ক্ষতিগ্রস্থ হয় যার ফলে বাচ্চা কম আইকিউ নিয়ে জন্মাতে পারে। হাইপোথাইরয়েডিজমের সঠিক প্রতিকার না হলে আরও কিছু সমস্যা যেমন- গর্ভপাত সময়ের আগেই প্রসব গর্ভকালীন উচ্চ রক্তচাপ মৃত সন্তান প্রসব ইত্যাদি হতে পারে।
এছাড়াও আয়োডিনের অভাবেও এ সমস্যা হতে পারে। বংশগত কারণেও গর্ভাবস্থায় হাইপোথাইরয়েডিজমের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। তবে এ সমস্যাগুলো উপযুক্ত চিকিৎসার মাধ্যমে রোধ করা যেতে পারে।
এতো গেলো কমে যাওয়ার প্রভাব এবার আসি বেড়ে গেলে কী হয় সে দিকে। গর্ভাবস্থায় মায়েদের শরীরে থাইরয়েড হরমোনের চাহিদা বেড়ে যায়। গরভকালীন এইচসিজি নামক হরমোন এবং ইস্ট্রোজেন থাইরয়েড গ্রন্থিকে উদ্দীপিত করে যাতে থাইরয়েড গ্রন্থি অতিরিক্ত থাইরয়েড হরমোন উৎপন্ন করে।
এই সমস্যা সাধারণত গর্ভাবস্থার প্রথম ট্রাইমেস্টার বা প্রথম তিন মাসে দেখা যায় দ্বিতীয় ট্রাইমেস্টার এর দিকে এটি আবার নিজে নিজেই ঠিক হয়ে যেতে পারে। এ সমস্ত সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে যেসব গর্ভবতী মায়েদের নিকট আত্মীয় কারও থাইরয়েডের সমস্যা আছে মা-বা-বোন তাদের গর্ভধারণের আগেই বা গর্ভধারণের পরপরই থাইরয়েড-এর পরীক্ষা করে দেখা উচিত।