সিঙ্গাপুরে চাকরির ভিসা পাওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় কি

প্রিয় দর্শক ভাই ও বোনেরা আপনারা যারা সিঙ্গাপুর কাজের ভিসা নিয়ে পাড়ি জমানোর আগে জেনে নিন কাজের ভিসা কি? কত ধরনের ভিসা চালু আছে সিঙ্গাপুরে?


কোন কাজের বেতন কেমন? সিঙ্গাপুর ভিসার জন্য কত টাকা লাগে? এই বিষয়গুলো জেনে বুঝে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে পারি জমানো উচিৎ। 


সিঙ্গাপুর ভিসা নিয়ে মাসে ৬০-৭০ হাজার টাকা নিশ্চিত বেতন! এ ধরনের বিজ্ঞাপনের পিছনে ঘুরে সময় নস্ট করবেন না। হা পাবেন, আপনার যদি ঔবেতন পাওয়ার যোগ্যতা থাকে। নিচে সিঙ্গাপুর কাজের ভিসা ও অন্যান্য ভিসা সম্পর্কে আলোচনার চেষ্টা করিছি।

সিঙ্গাপুরে চাকরির ভিসা পাওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় কি

সিঙ্গাপুর কাজের ভিসা ২০২৩ কারা পাবেন?

১. পেশাজীবি বা প্রফেশনাল ভিসা

এমপ্লয়মেন্ট পাস – যোগ্যতাসম্পন্ন বৈদেশিক প্রফেশনাল, ম্যানেজার এবং এক্সিউটিভ ইত্যাদি। এ ধরনের পেশাজীবীর মাসিক বেতন নুন্যতম ৩৩০০ সিঙ্গাপুরী ডলার। অর্থাৎ তাদের বেতন প্রায় ২ লাখ টাকার উপরে। 


এছাড়াও রয়েছে এন্ট্রি পাস ভিসা– এটি মুলত যারা সিঙ্গাপুরে নতুন ব্যবসা খুলতে যাচ্ছেন তাদের জন্য। এরপর আছে পারসোনালাইসড এমপ্লয়মেন্ট পাস/ভিসা – উচ্চ বেতনভুক্ত এমপ্লয়মেন্ট পাস ধারনকারী ও বৈদেশিক প্রফেশনাল। যেমন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আইনজীবী ইত্যাদি।


দক্ষ ও আধাদক্ষ কর্মীদের জন্য কাজের ভিসা

সিঙ্গাপুর এস পাস ভিসা: এ ধরনের ভিসার মধ্যমে এন্ট্রি লেভেলের দক্ষ কর্মী যাদের নুন্যতম বেতন ২২০০ (এক লক্ষ্য ৩৮ হাজার প্রায়) সিঙ্গাপুরী ডলার এবং যারা এমওএম এর নীতিমালা অনুযায়ী যোগ্যাতাসম্পন্ন কর্মী।


এছাড়াও রয়েছে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা – আধাদক্ষ কর্মী যারা হোটেল, ক্লিনার, কন্সট্রাকশন, মেশিনারী, মেরিন বা সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে কাজ করবে। তা ছাড়াও গৃহকর্মীদের ওয়ার্ক পারমিট আছে সিঙ্গাপুরে। 


সাধারণত সিঙ্গাপুরের বাসাবাড়ীতে কাজের জন্য এ ধরনের ওয়ার্ক পারমিট দেওয়া হয়। এছাড়াও নার্স, গৃহ তত্ত্বাবধায়ক, গৃহকর্মী, বিদেশী শিল্পীদের বার, হোটেল বা নাইটক্লাবে বিভিন্ন ধরনের কাজের জন্য পারমিটের ব্যবস্থা আছে সিঙ্গাপুরে।


পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জন্য ভিসা


স্থায়ী বাসিন্দা, এমপ্লয়মেন্ট পাস ও এস পাস ভিসা ধারীদের পরিবারের সদস্যদের যেমন, বউ / স্বামী ও ছেলেমেয়ে রা শর্ত পুরণ সাপেক্ষ্যে ডিপেন্ডন্ট ভিসা লাভ করে থাকে। তবে এর জন্য তাদেরকে শর্ত পুরন সাপেক্ষ্যে দীর্ঘমেয়াদের ভ্রমন পাস / লং টার্ম ভিসিট পাস/ভিসা দেওয়া হয়।


স্টুডেন্ট ভিসা/উচ্চশিক্ষার জন্য ভিসা


বিদেশী ছাত্রছাত্রী ও প্রশিক্ষনার্থীদের জন্য ভিসার ব্যবস্থা আছে। সে ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভর্তির যাবতীয় কাগজ-পত্র দাখিল করতে হবে।


অন্যান্য পাস / ভিসা

অল্প সময়ের জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত অর্থাৎ সর্বোচ্চ ৬০ দিন কাজের জন্য বিদেশী নাগরিকদের মিসেলেনিয়াস ওয়ার্ক ভিসা দিয়ে থাকে সিঙ্গাপুর।


সিঙ্গাপুর কাজের ভিসা ২০২৩ বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য সিঙ্গাপুরের জনশক্তি মন্ত্রনালয় ও বাংলাদেশের জনশক্তি মন্ত্রনালয় এর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।


সিঙ্গাপুর কাজের ভিসার জন্য কি কি জানতে হবে?

আপনি যে কোম্পানিতে কাজ করতে যাচ্ছেন সে কোম্পানির ভিসার ধরন, বেসিক রেট, প্রতি বছর ফ্রি রিনেউ করা যাবে কি না?

কোন শর্ত আছে কি না ইত্যাদি। আপনার পরিচিত কোন লোক যদি সিঙ্গাপুর থাকেন, তাহলে তাকে দিয়ে উক্ত কোম্পানিতে ভিজিট করে সব কিছু ঠিক আছে কিনা, তা চেক করতে বলতে পারেন। ভিসা পরবর্তী সময়ে কি কি সেবা পাবেন তা জেনে নেবেন।


সিঙ্গাপুর ট্রেনিং সেন্টার বাংলাদেশ

সিঙ্গাপুর দক্ষ ও অদক্ষ এ দুই ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিয়ে থাকে। যদিও এই মূহুর্তে বন্ধ রয়েছে। সরকারীভাবে প্রশিক্ষণ দিতে সারা দেশে ৬০টি ট্রেনিং সেন্টার রয়েছে। 


এছাড়াও সরকারের বিভিন্ন কারিগরি সেন্টার থেকেও প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ আছে। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) এসব পরিচালনা করে থাকে।


মাত্র ২০০ টাকা ফি দিয়ে এখানে ভর্তি হওয়া যায়। তবে বিশ্বাসযোগ্যতা ও জানাশোনার অভাবে প্রায় সবাই দ্বারস্থ হন বেসরকারি ট্রেনিং সেন্টারগুলোতে। সেখানে ওয়েল্ডিং, টাইলস ফিটিংসহ বিভিন্ন ধরনের ট্রেনিং দেওয়া হয়। 

তবে অনেকে মিথ্যা বেতনের ও সুযোগ সুবিধার কথা বলে প্রতারিত করছে। এ থেকে সাবধান হতে হবে বিদেশগামীদের।


বিদেশে হোটেল বিজনেস ভিসার চাহিদা অনেক!

বিদেশে কাজ করার জন্য শেফদের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। মানে যারা বিভিন্ন হোটেল ও রিসোর্টে রান্না করেন তাদের কাজের সুযোগ বেশি থাকে এবং এই পেশার লোকদের বলা হয় বাবুর্চি।


মধ্যপ্রাচ্য, এমনকি মালদ্বীপ, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরের মতো উন্নত দেশগুলোতেও একজন পেশাদার শেফের মাসিক বেতন ষাট থেকে সত্তর হাজার বাংলাদেশি টাকার কম নয়।


এ পেশার মানুষের জন্য ওয়ার্ক পারমিট ও ভিসা সংক্রান্ত জটিলতাও অনেক কমে গেছে। কিন্তু যারা রন্ধনশিল্প ভালোবাসেন তাদের জন্য এটা খুবই ভালো।


সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসা প্রসেস

সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসা প্রসেসিং এর জন্য সরকারি এবং বেসরকারি রেকোটিং এজেন্সির মাধ্যমে ভিসা প্রসেসিং এর কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন। তবে অবশ্যই জেনে রাখা উচিত যে বেসরকারি মাধ্যমে যদি সিঙ্গাপুরে যেতে চান তাহলে সরকারি থেকে দ্বিগুণ টাকা খরচ পড়বে। 


সরকারিভাবে সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিতে হলে অবশ্যই সরকারি এজেন্সি গুলোর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।


যেমন সরকারি প্রতিষ্ঠান বুয়েসেল অথবা বি এম ই টি অথবা অন্যান্য সরকার নিবন্ধিত এজেন্সিগুলোর মাধ্যমে সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসা প্রসেসিং করা হয়। তবে বছরের বিভিন্ন সময় এই সমস্ত সরকারি এজেন্সিগুলোতে সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন কোম্পানির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী তারা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে থাকে। 


তাই সরকারিভাবে যাওয়ার জন্য এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির জন্য আপনাদেরকে অবশ্যই ধৈর্য ধরতে হবে এবং সেই অনুযায়ী আবেদন করতে হবে।


আমরা আমাদের এই ওয়েবসাইটে সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসা রিলেটেড এবং অন্যান্য জব সার্কুলার রিলেটেড প্রতিনিয়ত নিয়মিত কনটেন্ট আপডেট করি। তাই চোখ রাখুন আমাদের এই ওয়েবসাইটে পরবর্তীতে সিঙ্গাপুর রিলেটেড এবং সিঙ্গাপুরের জরুরী কাজের ভিসা বিষয়ে বিস্তারিত পোস্ট দেখতে পারবেন।


সিঙ্গাপুর কাজের ভিসা কত টাকা

সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসা খরচ বর্তমানে চার থেকে ছয় লক্ষ টাকা, তবে দালাল ,এজেন্সি ও প্রতারকদের কারণে টাকা অনেক সময় বেশি লেগে যায় । 


আপনি যদি সচেতন হন তাহলে চার থেকে ছয় লক্ষ টাকার মধ্যে সিঙ্গাপুর ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেয়ে যাবেন। তবে অনেক সময় কাজের উপর নির্ভর করে ভিসার দাম কম বেশি হতে পারে, যেমন কনস্ট্রাকশন কাজের জন্য একরকম দাম, হোটেলের কাজের জন্য অন্যরকম দাম।


তবে অনেকেই দালাল চক্রের মাধ্যমে ওয়ার্ক পারমিট সংগ্রহের চেষ্টা করে থাকেন, তাদের ক্ষেত্রে টাকার পরিমান কম বেশি হতে পারে। 


অনেক দালাল চক্র অল্প টাকায় সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়ার লোভ দেখিয়ে প্রতারণা করে থাকে। বাংলাদেশি অনেক যুবক এ ধরনের প্রতারণার শিকার হয়। তাই দালাল ও প্রতারক চক্রের মাধ্যমে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সংগ্রহ করার চেষ্টা না করাই ভালো।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post